রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একেবারে শেষ দিকের লেখা গল্পের নাম ‘সে’ (১৩৪৪ বঙ্গাব্দ)। যদিও একে গল্প না বলে একটি গল্পগ্রন্থ বলা যায়। রবীন্দ্রনাথের আদরের নাতনি পুপের জন্য লিখেছিলেন এটি। সে-র গল্পগুলোকে অনেকে মনে করেন শিশুপাঠ্য। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ তাঁর এই রচনাগুলো সম্পর্কে বনফুলকে (বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়), তাঁর এক পত্রের জবাবে লিখেছিলেন, ‘পাঠকেরা ওটাকে শিশুপাঠ্যের কোঠায় ফেলে দিয়ে ওর প্রতি কৃপাকটাক্ষপাত করেছে– জানে না কাহিনীটা ছোটো থেকে ক্রমে বড়ো হয়ে উঠেছে স্বয়ং রচয়িতারই মতো।’ গল্পগুলোর শ্রোতা পুপে, রবীন্দ্রনাথের নাতনি, যার বয়স মাত্র নয় বছর, ‘পুপুদিকে সামনে বসিয়ে এবং সে-কে উপলক্ষ্য করে’ লেখক তাঁর গল্প ফেঁদেছেন অনেকটা রূপকথার ঢংয়ে। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়: ‘…শিশুকাল থেকে মানুষ বলছে ‘গল্প বলো’; সেই গল্পকে বলে রূপকথা। রূপকথাই সে বটে; তাতে না থাকতে পারে আবশ্যক সংবাদ, সম্ভবপরতা সম্বন্ধেও তার হয়তো কোনো কৈফিয়ত নেই। সে কোনো-একটা রূপ দাঁড় করায় মনের সামনে, তার প্রতি ঔৎসুক্য জাগিয়ে তোলে, তাতে শূন্যতা দূর করে; সে বাস্তব। …গল্প শুরু করা গেল …ছোটো মেয়ে চোখ দুটো মস্ত করে হাঁ করে শোনে। আমি বলি, ‘আজ এই পর্যন্ত।’ সে অস্থির হয়ে বলে, ‘না, বলো, তার পরে।’
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া