সুপর্ণা মণ্ডলের কবিতাগুলোতে দৈনন্দিন জীবনের সাধারণ দৃশ্য থেকে উঠে আসে গভীর মানবিক স্পর্শ ও অস্তিত্ববোধের মর্মরধ্বনি। প্রতিটি কবিতাই জীবনের অনুচ্চারিত অন্তঃস্বরে ভরা। সহজ ভাষায় লেখা, অথচ গভীর ভাবনায় ডুব দেওয়া কবিতাগুচ্ছ।
বসত করে কয়জনা
ঘুলঘুলিতে পায়রার বাসা
কোনায় কোনায় মাকড়সার জাল
টিকটিকির ঘর
বিশেষ বিশেষ ঋতুতে বাসা করে কেউ
এক ধরনের পোকা মাটি দিয়ে ঘর করে
ডিম ফুটে বাচ্চা বেরিয়ে যাওয়ার পরেও
বাড়িটা থেকে যায়
রাতে আলো জ্বালালে কত পোকামাকড় আসে
আলো নেভাতেই জ্বলে ওঠে জোনাকি
একটাই ঘর
তার মধ্যে কতজনের বাড়ি!
জুতো
শহরের সঙ্গে গ্রামের সম্পর্ক
একসময় ছিল
জুতো পরার
গ্ৰামের লোকেরা শহরে যখন আসত
কেবল তখনই জুতো পরত তারা
আর ছুটির সময় শহর থেকে গ্রামে গেলে
জুতো না পরার আনন্দে মেতে উঠতাম আমরা
কখন জুতোটা ছেড়ে মাটিতে পা রাখব সেই ভাবনা
এইটুকু একটা জুতো
মাটির থেকে আলাদা করে রাখত আমাদের
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
ডিয়ার লটারি
একচিলতে লটারি টিকিট
তারও ভাগ্য
নির্ধারিত হবে
মানুষের দিন বদলাবে
না কি শিশুদের খেলায়
বাসের টিকিট
কিংবা নকল টাকার তাড়া হবে
হয়তো-বা বাদাম ভাজার সাথে
এক চিমটে লবণ জোগাবে
গাছের বড়ো হওয়া
মাঝে মাঝে বাড়ি যেতে হয়
যেতে হয় আরও নানা কাজে
গাছ লাগাতে ইচ্ছে করত
লাগাতাম না
পাছে মারা যায় জলাভাবে!
তারপর বুদ্ধি করে জলেই লাগিয়েছি গাছ
ঘরে থাকলে বোঝা যায় না কতটুকু বড়ো হল গাছ
গাছের বড়ো হওয়া বুঝতে মাঝে মাঝে
বাড়ি চলে আসি
বৃষ্টির পর
শাখা থেকে পাখি উড়ে গেলে
গাছও ঝরিয়ে দেয় অবশিষ্ট জল
বৃষ্টির সময় এসে আশ্রয় নিয়েছিল পাখি
নিজেকে শূন্য করে গাছ তাকে দিয়েছিল
নিশ্চিত কোটর
বহুযুগ সঞ্চিত বৃষ্টির জলের যত ক্ষয়
গাছই ধারণ করে অস্থিপঞ্জরে
পাখি শুধু ঝেড়ে ফেলে পালকের জল
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই,ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।