জীবনানন্দের গদ্যসাহিত্যে ব্যক্তির মনন ও চেতনার নানান দিক, ব্যক্তির
নিঃসঙ্গতা, মানসিক সংকট, নারী-পুরুষের
সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যে দিয়ে এক
নিদারুণ নির্মম জগৎ নির্মিত হয়েছে। তাঁর গদ্য-উপন্যাসের নায়কেরা কলকাতায় আসে চাকরির খোঁজে। কিন্তু তারা প্রায় সকলেই
ব্যর্থ, অনেকটা নিষ্ক্রিয়। ফলে প্রায়শই তারা ফিরে যেতে
চেয়েছে গ্রামে, তাদের চিন্তা ও কল্পনার মধ্যে প্রতিনিয়তই
ফিরে এসেছে গ্রামজীবনের স্বাচ্ছন্দ্য, প্রশান্তি এবং
প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের প্রতি তীব্র আকর্ষণ। নিরুপম যাত্রার প্রভাতও এমনই
একজন। চাকরির সন্ধানে প্রভাত গ্রাম ছেড়ে
কলকাতায় এসে একটা মেসে ওঠে। সে শিক্ষিত, দীর্ঘ চেষ্টার পর একটা চাকরি সে জোগাড় করেছিল, কিন্তু
কলকাতার জীবন, বিশেষত মেসের বদ্ধ গুমোট পরিবেশে সে হাঁপিয়ে
ওঠে। প্রতিনিয়ত সে ফিরে যেতে চেয়েছে তার গ্রামে। কিন্তু তার ফেরা হয়নি,
তার আগেই মেসে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু মেসের
বাকি সদস্যদের কাছে অত্যন্ত অস্বস্তিকর হয়ে ওঠে। তার মৃতদেহ সকলের
কাছে হয়ে ওঠে অবাঞ্ছিত, বিরক্তিকর এক
বোঝা। সংসারের
কর্তব্য সংগ্রাম নিষ্পেষিত বন্ধনাত্মা যুবক প্রভাত কোনোদিন তার
প্রমত্ততম কল্পনায়ও মনে করে নি যে এই মেসে সে মরবে—
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া