মার্থা সৌদামিণী সিংহ তাঁর নারী চরিত গ্রন্থের ভূমিকায় লিখেছিলেন, “মনুষ্য-প্রকৃতি অনুকরণে নিয়ত অনুরক্ত। অন্যের অবস্থা বা ভাব, মনে প্রতিভাসিত হইলে, তাহার আন্তরিক ও বাহ্য
ক্রিয়ার অনুকরণ করিতে প্রায় সকলেরি প্রবৃত্তি জন্মে। বিশেষত বালক বালিকারা ইহাতে
একান্ত তৎপর। পিতা মাতা ও বয়স্যগণ, সর্ব্বদা যে সকল
ক্রিয়ার অনুষ্ঠান করেন, উহারা প্রায় তাহাই করিয়া থাকে।
বালকেরা যেরূপ কল্পিত বিচারপতি, শিক্ষক ও অশ্বারোহী হয়,
বালিকারাও সেই রূপ কেলীগৃহ নির্ম্মাণ, ধুলির
অন্ন ব্যাঞ্জন প্রস্তুত ও পুত্তলিকাকে সন্তানের ন্যায় লালন পালন করে; বস্তুতঃ সকলেই অনুচিকীর্ষা বৃত্তির অধীন। এই কারণেই জীবন চরিত শিক্ষা
কার্য্যের এক প্রধান অঙ্গ হইয়া উঠিয়াছে। জীবন চরিত পাঠে দুই প্রকার ফল লাভ হইয়া
থাকে। প্রথমতঃ কেহ কেহ আপন উদ্দেশ্য সিদ্ধির জন্য যে যৎপরোনাস্তি পরিশ্রম ও
অবিচলিত অধ্যবসায় সহকারে নানা বিঘ্ন বিপত্তি সত্ত্বেও সহিষ্ণুতা অবলম্বন করিয়া
স্বীয় স্বীয় মনোরথ সফল করিয়াছেন, তাহা পাঠ করিলে এক কালে
তা অসংখ্য উপদেশ লাভ হইয়া থাকে। দ্বিতীয়তঃ সেই সেই ব্যক্তির বর্ত্তমান কালীয়
নানা দেশের আচার ব্যবহার ও রীতি নীতি প্রভৃতির বিশেষ জ্ঞান জন্মে। অতএব
বঙ্গবিদ্যার্থী বালিকাগণের শিক্ষা জন্য আমি কতগুলি বিদ্যাবতী, গুণবতী ও ধার্ম্মিকা নারীর জীবন চরিত ইংরাজী হইতে বঙ্গভাষায় সংগ্রহ
করিলাম।” এই গ্রন্থে হানামুর, এলিজাবেথ
ফ্রাই, মার্গ্রেট রোপর, লেডি জেন্
গ্রে, হাইপেসিয়া প্রভৃতি বিদগ্ধ মহিলার জীবন চরিত সংকলিত
করেছেন।
বিস্তারিত প্রতিক্রিয়া