প্রকাশিত হল বাপি গাইনের গুচ্ছ কবিতা— ‘শিরোনামহীন’।
১
একটি পা চিতায় আর একটি সংসারে
এখন আমি পথভ্রষ্ট আলোর অন্ধকারে
দাঁড়িয়ে আছি, অমোঘ যদি স্বল্প দেখা দেয়
হয়তো আমি মুক্তি পাব, পাব তো নিশ্চয়?
কিন্তু দিকে দিকে পাহারা সম্ভাবনা কই
দাঁড়িয়ে থাকার সম্পর্কে আমিও বন্ধু হই
ওই আসাটির, যা এখনও আসতে দেরি আছে
শরীর ভীতু শরীর আমার ব্যর্থ হয়ে বাঁচে।
২
মাথার মধ্যে সারাক্ষণ কাক ডাকে। পরিবেশবান্ধব কাক।
যেন এই দেহ এক মার্গীয় উৎসব।
যেন এই দেহ এক বারোয়ারি ভাগাড়ও।
যে যার অতিরিক্ত উচ্ছিষ্ট নিয়ে আসে
যে যার লুকোনো পাপ— পাপকৃত ফল নিয়ে
লোকচক্ষুর আড়ালে আবির্ভূত হয়
আর অপূর্ব এই হৃৎভাণ্ডে সব ক্রোধ সব লজ্জা গ্রহণ করিয়া
আমি তাকে আমি তাহাদের মনঃস্তাপ হইতে মুক্ত করি।
এই কাজে গুরুতর আনন্দ হয়।
আনন্দকে আমি বিরহকুসুম নামে ডাকি।
বিরহের চোখ নেই মন নেই তবু সাড়া দেয়।
কাকপক্ষী গূঢ় এই যাতায়াতে মুখ বন্ধ করিয়া থাকে।
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
৩
শুধুমাত্র কবিতা দিয়ে জীবনের সব ব্যর্থতা কি মুছে ফেলা যায়?
সাফল্য চাইনি আমি— তোমাকে চেয়েছি
একজীবনে এর থেকে বেশি কিছু চাওয়া উচিত নয়।
আজ তোমার মুখ মনে পড়তেই
মনে হল বেঁচে থাকাই একমাত্র পথ
বাইরে সপ্রতিভ রোদের সকাল
বাইরে কলকাকলির পাড়া
মাথার উপর একটা চিল উড়ে যাচ্ছে তোমাদের শহরের দিকে।
৪
পাথরের সঙ্গে থাকতে থাকতে একটা মানুষ কখন পাথর হয়ে যায়— সে নিজেও জানে না।
এই পৃথিবীর আলো ও বাতাসকে ভয় পাওয়ার অনেক কারণ আছে
যে-মানুষ শুধুই উপেক্ষা দিয়ে গড়া তাকে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে।
যখন এই পৃথিবীটাকেই অগ্রাহ্য করে তুমি বেড়ে উঠছ
আর বিশ্বাস নামক জন্তুটাকে ছিঁড়ে ফেলছ নিজের জীবন থেকে
তখন মুহুর্মুহু ঘন্টা বাজছে কোথাও
আর স্পষ্ট হয়ে উঠছে নাটকীয় হাত
যে-হাত অদৃশ্য সবার পেছনে।
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই,ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।
মন্তব্য করুন