অভিমন্যুর এই কবিতাগুলো একসঙ্গে খুলে দেয় পিরিত, অভিমান, প্রকৃতি ও মানুষের অন্তর্গত যন্ত্রণা-সৌন্দর্যের বিস্ময়কর দরজা। শব্দের ভেতর আলো-অন্ধকারের যাত্রা, রূপকের ঘোর, নদী-মাটি-চাঁদে বোনা এক নরম অথচ গভীর অনুভবের জগৎ।
ফসল
এবারটি মুখ ফেরাও
দেখো পিরিত কীভাবে লালপানা চোখে-মুখে
দেখো অন্নপাত্র। শ্রাবণ ধারাপাত
তোমার দৃষ্টির জন্য যে নির্জনতা
ধানের রংও সেখানে পরাজিত
এবারটি মুখ ফেরাও
ডুবি-ভাসি, পৃথিবী নাড়াই
দেখো বাতাস শূন্যের দিকে ধায়
কেউ ফেরে, কেউ ফেরে না
যে ফেরে–তার পায়ে লৌকিক লাল আলতা
যে ফেরে না–তার পায়ে দিগন্ত ও পরম
কার্তিকেয় চাঁদ ফের উঠেছে
আনমনে ছলকে উঠছে অভিসার
রূপান্তর
হায় হায় রাঙা শালুক বড়ো লাজুক
যেন ভেসে রয়েছে অন্নপূর্ণারই চোখ
পানকৌড়ি পাখিরা বাঁক দিয়ে যায়
ওদের খেলার ভিতর ঘাটের চোরাটান
অতলের সঙ্গে দেখা হয়ে যায়;
কুয়াশাবাটির ভেতর পিরিতির ‘বহি’
তিলাবনি ডুংরি পার হয় অপরাধের নাম
ঘন আঘন দুয়ারে ভিজুক কাপড়ের সর্বনাম
কেতাব-ই’র ব্লগজিন বিভাগে লেখা পাঠাতে চান? মেল করুন blogzine.ketabe@gmail.com-এ। মেলের সাবজেক্ট লাইনে লিখুন ‘কেতাব-ই ব্লগজিনের জন্য লেখা’।
রং
এই যে ফুরিয়ে এল ঘোর–
ফেলে আসা মায়া...
আলোর দোহাই
মাঠাবুরু কতটুকু বোঝে? জিরিয়ে নাও
পাহাড়তলে উপচে পড়ে মানতের ঘোড়া।
ঘোড়াগুলি চরে বেড়ায় অভাবী সংসারে
এই ঘাম, কিছুটা প্ররোচনা উড়িয়ে দিই
তারপর ভয় হয়, পিরিত যদি হেলে পড়ে
অকারণে গুহাচিত্রের ঘুম ভেঙে যায়
সংলাপ
আড়াল রাখি আবছা বিষাদ
হাঁটি তালতলের হাটে, বাউল-রস
ভাদরিয়া গন্ধ পেরিয়ে ডাকে কেউ
ঝুমুর গীতে বদলে যায় চোখ
অভিমান মেখে নিবিড় হয়েছি
নুয়ে পড়া চাঁদের কাছে।
এলোমেলো গৃহে ভেসে বেড়ায় বাচাল কথা
হলদে সরষে খেতের পাশে পুরোনো বিষাদ
যে বিষাদ কেবলই সুখ, মেঘের মুখোমুখি
কেতাব-ই’র মুদ্রিত বই,ই-বই এবং ব্লগজিন বিভাগের লেখালিখির নিয়মিত খোঁজখবর পেতে আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত হোন।
এই ব্লগজিনে প্রকাশিত সমস্ত লেখার বক্তব্য লেখকের নিজস্ব।